কাঠ বাদাম ও কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা


 
আপনি যদি কাঠ বাদাম ও কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান তাহলে এই পোস্টটি শুধুমাত্র আপনার জন্য। আজকে আমরা এই পোস্টের মধ্যে আলোচনা করব কাঠবাদাম ও কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত। আমাদের জীবনে সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য পুষ্টিকর খাবার খাওয়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ । 








আমাদের জীবনে বেঁচে থাকতে হলে অবশ্যই সুস্থ ভাবে জীবন যাপন করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ।আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বেঁচে থাকতে হলে খাদ্য তালিকায় পুষ্টিকর খাবার কাঠ বাদাম ও কিসমিস রাখা অবশ্যক । কাঠবাদাম ও কিসমিস এই দুইটাই অনেক পুষ্টিকর খাবার এটা শরীরের জন্য অনেক স্বাস্থ্যকর এদের রয়েছে বিভিন্ন উপকারিতা । তাহলে চলুন এই পোষ্টের মধ্যে জেনে নেওয়া যাক কাঠবাদাম ও কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে ।

পোস্ট সূচিপত্র ঃ কাঠ বাদাম ও কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

লেখকের শেষ মন্তব্য 

কাঠ বাদাম ও কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা 

কাঠ বাদাম ও কিসমিস খাওয়ার অনেক উপকার রয়েছে উপকারগুলো জানলে আপনি নিজেও নিয়মিত খেতে শুরু করবেন।  কাঠ বাদামে ও কিসমিসে এত পরিমাণে ভিটামিন ও পুষ্টি আছে তা বলে শেষ করা যাবে না । তাহলে চলুন এই পোষ্টের মধ্যে জেনে নেওয়া যাক কাঠবাদাম ও কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত। 

  •  ওজন কমানোর জন্য  সাহায্য করে কাঠবাদাম অনেকেই মনে করেন কাঠ বাদাম খাওয়ার পর শরীরের ওজন অনেকটাই বেড়ে যায়, শরীর মোটা হয়ে যায় । কিন্তু আসলে এটি ভুল ধারণা, কাঠ বাদামে যে চর্বি রয়েছে , এটি যদি আপনি  প্রতিদিন নিয়ম করে সঠিক পরিমাণে খান তাহলে আপনার শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করবে। কারণ কাঠবাদাম নিয়মিত খাওয়ার ফলে আপনার ক্ষুধা অনেকটা কমে যাবে, যার ফলে আপনার পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার খাওয়ার দরকার পড়বে না অল্প  খাবার খেয়েই থাকা যাবে । 
  •  কাঠবাদাম উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ  করার জন্য অনেক বেশি সাহায্য করে। কাঠবাদাম রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বজায় রাখে এবং উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। 
  •  নিয়মিত কাঠ বাদাম খাওয়ার ফলে এটা হৃদরোগের জন্য অনেক উপকারি । কারণ নিয়মিত কাঠ বাদাম খাওয়ার ফলে এটা শরীরের হৃদরোগের ঝুকি কমাতে অনেকটাই সাহায্য করে, কাঠবাদামের পুষ্টি উপাদান গুলো হৃৎপিণ্ড ভালো রাখতে সাহায্য করে এবং এটা হার্ট এর জন্য খুবই উপকারী। 
  •  নিয়মিত কাঠ বাদাম খাওয়া খাওয়ার ফলে এটা শরীরের হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। অনেকেরই হজমের সমস্যা হয় এই হজমের সমস্যা কমাতে  নিয়মিত কাঠ বাদাম খাওয়া উচিত যা হজম শক্তিকে বৃদ্ধি করে। 
কিসমিস সম্পর্কে বিস্তারিত ঃ
  • কিসমিস সাধারণত আমাদের শরীরে আয়রনের ঘাটতি পূরণ করে এবং রক্তের লাল কনিকার পরিমানও বাড়ায়। আমরা সচরাচর সবাই জানি কিসমিস শুকনা খাওয়ার চেয়ে ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা বেশি পাওয়া যায়। প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ টা কিসমিস এক গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে সারারাত ভিজিয়ে রাখা কিসমিসের পানি অনেক বেশি উপকারী। প্রতিদিন নিয়মিত কিসমিসের পানি খেলে মুখ পরিষ্কার করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং রক্ত পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। 
  • অনেকেই আছে যারা শরীরের ওজন কমাতে চান না বরং কিছুটা ওজন বাড়াতে চান। যারা শরীর স্বাস্থ্য ভালো রাখতে চান এবং ওজন বাড়াতে চান তাহলে নিয়মিত কিসমিস খেতে পারেন । আসলে কিসমিস প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে যা রক্তনালীকে শিথিল করে এবং উচ্চ রক্তচাপ থেকে সাহায্য করে। 
  •  নিয়মিত কিসমিস এতে করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। কিসমিসে এমন কিছু আলাদা পুষ্টি রয়েছে যা আপনার অনিদ্রা কাটিয়ে আপনাকে দিতে পারে আরামদায়ক এবং শান্তির ঘুম। নিয়মিত কিসমিস খাওয়ার ফলে ক্যান্সারের মতো রোগ থেকে বাঁচাতে পারে এটা ক্যান্সারের ঝুকি কমাতে সাহায্য করে। 
আরও পড়ুনঃ 

কাঠ বাদাম ও কিসমিস খাওয়ার অপকারিতা

  • কাঠ বাদামের অপকারিতা নাই বললেই চলে এটা উপকারী বেশি করে। কিন্তু সবকিছুর যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি কিছু অপকারিতাও  রয়েছে। কাঠবাদামে অতিরিক্ত ক্যালরি থাকার কারনে এটা বেশি পরিমানে খাইলে শরিরের ওজন বেড়ে যেতে পারে । বেশি পরিমানে খাইলে গ্যাস,বমি , পেট খারাপ হতে পারে । এই টা অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুকি বাড়ে । 
  • কিসমিস খাইলে যেমন উপকারিতা আছে তেমনি অপকারিতা ও রয়েছে । কিসমিস বেশি খায়ার ফলে এলার্জির সমস্যা হতে পারে, তাই যাদের এলার্জির সমস্যা আছে তারা কিসমিস খাবেন না, যদি খান অল্প পরিমাণ মতো খাবেন। যাদের ডায়বেটিসের সমস্যা আছে ,তারা কিসমিস বেশি পরিমাণে খাবেন না এতে করে আরো সমস্যা বেড়ে যেতে পারে । যারা শরীরের ওজন কমাতে চান, তারা বেশি পরিমাণে কিসমিস খাবেন না , কারণ কিসমিসে ওজন বাড়ায়। অতিরিক্ত কিসমিস খাওয়ার ফলে এটা হজমে বিঘ্ন ঘটায় , তাই অতিরিক্ত কিসমিস খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। 

কাঠ বাদাম ও কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার  উপকারিতা 

কাঠ বাদাম ও কিসমিস দুটোই অনেক পুষ্টিকর খাবার এবং এইগুলা যদি পানিতে ভিজিয়ে খাওয়া যায় ,তাহলে উপকার আরও বাড়ে । কাঠ বাদাম সারারাত ভিজিয়ে রাখার ফলে এতে থাকা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া দূর হয় এবং ক্ষতিকর এসিড ও দূর হয় এবং এর পুষ্টি দিগুণ বেরে যায় । কাঠ বাদাম খেলে পেট ভরা থাকে যার ফলে ক্ষুধা ও অনেক কম লাগে বেশি খাবার খাওয়ার প্রয়োজন পরে না । 

কাঠ বাদাম সারারাত ভিজিয়ে রাখার ফলে এর উপরের স্তরের ক্ষতিকারক উপাদান নষ্ট হয়ে এর পুষ্টি অনেক বেড়ে যায় যা হজমশক্তি বৃদ্ধি করে । সারা রাত  ভিজিয়ে রাখা কিসমিস হৃদযন্ত্রের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং হজমের  উন্নতি করে । কিসমিসে থাকা পটাসিয়াম রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে । 

রাতে কাঠ বাদাম ও কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা

রাতে কাঠ বাদাম ও কিসমিস একসাথে খাওয়া তে তেমন কোন আলাদা উপকারিতা নেই । এই দুটি খাবার সাধারনত সকাল ও বিকালে খাইলে বেশি উপকারে আসে । তবে যে রাতে খাইলে উপকারিতা পাওয়া যাবে না এই টা একদম ভুল ধারনা অবশই উপকারিতা আছে । 
  • রাতে নিয়মিত কাঠ বাদাম খাওয়ার ফলে ঘুম ভালো হয় ।
  • রাতে কাঠ বাদাম খাওয়ার ফলে হৃদযন্ত্র ভালো রাখে ,এতে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট হৃদযন্ত্রের ঝুঁকি কমায় । 
  • ডায়াবেটিস কমাতে ও নিয়ন্ত্রণ  করতে  সাহায্য করে ।
  • ওজন  করে, এটি খাওয়ার ফলে পেট ভরা থাকে এবং রাতে খাওয়ার প্রবনতা কমে । 
রাতে কিসমিস খাওয়ার উপকারিতাঃ
  • রাতে কিসমিস নিয়মিত খাওয়ার ফলে হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে । 
  • রক্ত পরিস্কার রাখে এতে থাকা আয়রন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রক্ত পরিষ্কার রাখতে অনেক সাহায্য করে। 
  • রাতে কিসমিস নিয়মিত  খাইলে এই টা হাড়ের জন্য অনেক বেশি উপকারি এটা ক্যালসিয়াম বাড়ায় ও হাড়কে শক্তিশালী করে । 
  • সারাদিনের ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে ।
আরও পড়ুনঃ 

সকালে খালি পেটে কাঠ বাদাম ও কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা 

কাঠ বাদাম ও কিসমিস একসাথে পরিমান মতো একটা পাত্রে রেখে পানিতে সারারাত ভিজিয়ে রাখতে হবে । এই ভিজিয়ে রাখা কাঠ বাদাম ও কিসমিস অনেক বেশি পুষ্টিকর হয়ে উঠে । সারারাত ভিজিয়ে রাখার ফলে এতে থাকা ব্যাকটেরিয়া কে নষ্ট করে এর গুন ও পুষ্টি বাড়িয়ে তুলে । সকালে খালি পেটে ভিজিয়ে রাখা কাঠ বাদাম ও কিসমিস খাওয়ার পর এই ভিজিয়ে রাখা পানি ও খেয়ে নিতে পারেন। 
  • ভেজানো বাদামে থাকে ভিটামিন E ও ফ্যাটি এসিড, যা স্মৃতিশক্তিকে উন্নতি করে এবং মস্তিষ্ককে সুস্থ রাখে। 
  • কাঠ বাদামে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হৃৎপিণ্ডকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। 
  • ভেজানো বাদাম ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে ,যারা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অনেক উপকারী। 
কিসমিসঃ
  • ভেজানো কিসমিস এ থাকা অক্সিডেন্ট ও ফাইবার লিভার পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে ।
  • ভেজানো কিসমিসে থাকে প্রাকৃতিক ফাইবার, যা হজম শক্তিকে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সাহায্য করে। 
  • ভেজানো কিসমিস ত্বক ভালো রাখতে সাহায্য করে এটি ত্বকের বয়সের ছাপ এবং ব্রণ কমাতে সাহায্য করে।

কাঠ বাদাম ও কিসমিস খাওয়ার নিয়ম 

কাঠ বাদাম ও কিসমিস পরিমাণ মতো নিয়ে একটা পরিষ্কার পাত্রে পরিমান মতো পানিতে ভিজেয়ে রাখতে হবে। সকালে ঘুম থেকে উঠে ভিজেয়ে রাখা কাঠ বাদাম ও কিসমিস একসাথে খাবেন। কিসমিস কিছুটা আলাদা পাত্রে ভিজিয়ে রেখে দিবেন, তার পর প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে নিয়ম করে কিসমিস এর পানি খাবেন । শুকনা কিসমিস ও কাঠ বাদাম এর থেকে ভিজিয়ে খাইলে বেশি উপকারি । তাই সবার উচিত কাঠ বাদাম ও কিসমিস  শুকনা না খেয়ে ভিজিয়ে নিয়ম করে খাবেন ।

দিনে কতটুকু কাঠ বাদাম ও কিসমিস খাওয়া উচিত 

কাঠ বাদামঃ প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ টা কাঠ বাদাম নিওম করে খাওয়া উচিত । এর থেকে বেশি খাইলে শরীরের অনেক রকমের সমস্যা হতে পারে । যেমনঃ অতিরিক্ত খওয়ার ফলে ওজন বৃদ্ধি পায়, পেটের সমস্যা যেমন গ্যাস, বমি হওয়া আরো অনেক সমস্যা হতে পারে। 

কিসমিসঃ প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ টা কিসমিস নিওম করে খাওয়া উচিত । তবে কিসমিস শুকনা খাওয়ার থেকে ভিজিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করবেন । ভিজিয়ে রাখা কিসমিসের পানি ও খাওয়া উচিত এতে শরীরের জন্য অনেক বেশি উপকারি। তবে কিসমিসের পরিমান খুব বেশি নিবেন না , যতটুকু প্রয়োজন ঠিক ততোটুকু নিওম করে খাওয়া উচিত । 

কাঠ বাদাম ও কিসমিস খাওয়ার প্রাসঙ্গিক টিপস

প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে ভিজিয়ে রাখা কাঠ বাদাম ও কিসমিস খাবেন । খালি পেটে কাঠ বাদাম ও কিসমিস খাইলে শরীরের হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে ।রাতে ঘুমানোর আগে ও খাইতে পারেন এতে করে মস্তিষ্ক শান্ত থাকে এবং ঘুম ভালো হয়। কতটুকু খাওয়া উচিত প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ টি ভেজানো কাঠ বাদাম এবং ১০ থেকে ১৫ টি ভেজানো কিসমিস । 

আরও পড়ুনঃ 

লেখকের শেষ মন্তব্য 

উপরে থাকা পোস্ট থেকে আমরা অনেক কিছু জানতে পারলাম । আশা করি এই আর্টিকেল থেকে আপনারা সবাই খুব ভালোভাবে বুঝতে পারছেন। কিভেবে কাঠ বাদাম খাবেন এর উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত । তাই সবাই এই নিয়ম অনুসরণ করে কাঠ বাদাম ও কিসমিস খাবেন ।

এই আর্টিকেলটি পড়ার পর আপনার যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। যাতে করে আপনার বন্ধুরাও এই সম্বন্ধে সব কিছুর সঠিক তথ্য বিস্তারিত জানতে পারে। সর্বশেষ কথা এরকম নিত্য প্রয়োজনীয় সকল তথ্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমাদের ওয়েবসাইট এ নিয়মিত ভিজিট করুন।


 ধন্যবাদ 






























এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

জেভন্টার নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url